নারীদের জান্নাত পাওয়ার ১১টি সহজ আমল
হযরত শাইখ আহমাদুল্লাহ দাঃ বাঃ প্রিয় মা-বোনদের জান্নতে যাওয়ার ১১টি আমল সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের আলোকে নসিহত করেন। যেঁগুলো মা-বোনদের জীবনকে আলোকিত করবে।
দুনিয়াতে আপনাকে মর্যাদার আসনে আসীন করবে আর আখেরাতে আল্লাহর কাছে প্রিয় বান্দি হিসাবে উপস্থাপিত হবেন এবং জান্নাত লাভ করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে বুজবেন আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসেন?
কুরআন-হাদিসের জ্ঞান অর্জন
কোরআন এবং হাদিসের জ্ঞান অর্জন করা এবং এটি সকল মুসলমানের জন্য ফরজ। আমরা অনেকেই আছি যারা ইসলামের ফরজ বিদি-বিদ্বান গুলো জানেনা।
যেঁগুলো অবশ্যই কর্তব্য সেগুলো আমরা অনেকে জানিনা শুধু নামে মুসলমান, প্রচলিত কিছু গতাগতিক কাজ করি আর মনে করি ব্যাস আমি মুসলমান হয়ে গেছি।
আপনাকে ইমান সম্পর্কে জানাতে হবে, কোন কোন বিষয়ের উপর বিশ্বাস থাকতে হবে, ইমান সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা আছে আমরা আল্লাহ সম্পর্কে পুরপুরি জানিনা, আখেরাত সম্পর্কে জানিনা।
নবি রাসুল সাঃ সম্পর্কে জানিনা, এগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ৫ ওয়াক্ত নামাজের সকল বিদি বিদ্বান জানতে হবে। এই রকম অনেক মা-বোন আছেন যারা নামাজের বিদি বিদ্বান সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন না। এইগুলো জানতে হবে। ইসলামকে জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ যাদের আমল আল্লাহ কবুল করেন না
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়
মেয়েরা জান্নাতে যাওয়ার যে শর্টকাট সিলেবাস আল্লাহর রাসুল সাঃ দিয়েছেন, ৪টা আমল বলেছেন তার মধ্যে একটি হলো নামাজ। অনেকে মহিলারা আছেন জূহরের নামাজ আসরের সময়ের কাছাকাছি গিয়ে আদায় করেন।
পরিবারের কাজ করতে করতে আসরের ওয়াক্তের সময় গনিয়ে আসে তখন গিয়ে নামাজ পরেন, এটা খুবি গর্হিত একটি কাজ।
মা-বোনরা সতর্ক থাকবেন এব্যাপারে, নামাজ সময়মত আদায় করতে হবে। সয়তান আপনাদের একটি বড় দোকা দেয় এটা দিয়ে যে আপনি কাজ একেবারে শেষ করে গোসল করে তারপর নামাজ পরবেন।
আপনার পরিহিত কাপরে যদি দুর্গন্ধ না থাকে কোন ময়লা না থাকে, অপবিত্র না হয় তাহলে আপনি ঐ পোষাকেই নামাজ আদায় করতে পারবেন। এরপর নামাজ পরে বাকী কাজ করবেন। তবে কখনো বলবেন না কাজ শেষ করে নামাজ আদায় করব।
আরও পড়ুনঃ দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়
রোজা রাখা
রমজান মাসে রোজা রাখা এব্যাপারে অবশ্য পুরুষদের তুলনায় মা-বোনেরা অনেক এগিয়ে, তবে রোজা রেখে মিথ্যা, গীবত এবং মানুষের সমালোচনা এইসব করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। এই গুলো করা যাবেনা, এইগুলো থেকে বেছে থাকতে হবে।
আবার অনেক মা-বোন আছেন গর্বে সন্তান আসলেই বা সন্তানকে স্থন পান করালেই এর ওজুহাত দিয়ে রোজা ছেরে দেন এবং রমজানের রোজা ঠিক মত রাখেন না। এটি ভুল, যতক্ষণ পর্যন্ত শরীরে শক্তি আছে ততক্ষণ পর্যন্ত রোজা ছাড়া যাবেনা।
আরও পড়ুনঃ আমাদের জীবনে কেন বিপদ আসে
স্বামীর আনুগত্য
প্রত্যেক স্ত্রী কে তার স্বামীর আনুগত্য করতে হবে, অনেকে আছেন রোজা রাখেন, নামাজ পরেন কিন্তু স্বামীর কথা শুনেন না।
আজ এই মানসিকতা পশ্চিমা বিশ্ব থেকে এসেছে। অবশ্যই একজন স্ত্রী তার স্বামীকে অভিভাবক মানবেন এবং তার সকল ভালো কথা গুলো শুনবেন।
ইজ্জতের হেফাজত
বর্তমানে আমরা এমন একটা সমাজে বসবাস করতেছি যেখানে স্কুলের বইয়ে শিক্ষার নামে আমাদের সন্তানদের চরিত্র নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে করতে তাদেরকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষার নামে কু-শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। যার কারণে আমার-আপনার সন্তান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই জন্য বলা হয় একজন চরিত্রবান ছেলে-মেয়ে আজকাল সোনার হরিণ হয়ে গেছে। ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে আমাদের সন্তানদের বিনোদনের নামে।
আরও পড়ুনঃ ধৈর্যশীল হওয়ার উপায়
এইগুলো আমাদের দেশের সংস্কৃতি ছিলনা। আমাদের সংস্কৃতিকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বইয়ের মধ্যে এই অপসংস্কৃতি দিয়ে।
নবি রাসুল সাঃ বলেন যে ব্যাক্তি তার মুখ এবং লজ্জা স্থানের হেফাজত করবে তার জান্নাতে যাওয়ার দায়িত্ব আমি নিয়ে নিলাম। তাই অবশ্যই অবশ্যই নারীদের ইজ্জৎকে হেফাজত করতে হবে।
সন্তানদের সুশিক্ষা দেওয়া
আপনার সন্তানকে ইসলামী শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে তুলতে হবে, বাঁজার থেকে আম কিনে খাওয়ার থেকে একটা আম গাছ লাগাতে পারলে আপনার জীবন সুখি হতে পারবেন।
তেমনি ভাবে ছেলে মেয়েদের ইসলামী শিক্ষি দিয়ে মানুষের মত মানুষ করতে হবে, তাহলে আপনি দুনিয়াতে সুখে থাকবেন এবং আখিরাতেও সুখে থাকেন, আপনার বংশ্যধরেরাও সুখি হতে পারবে।
এই জন্য সন্তানকে আল্লাহ ভীরু, মুত্তাকী, পরহেজগার বানান। কুরআন হাদিস শিখান, পর্দার শিক্ষা দেন, চরিত্র হেফাজত করতে শিখান, ভালো মানুষ বানান তাহলে আপনি দুনিয়াতে আম গাছ লাগিয়ে গেলেন।
কবরে গেলেও আপনি যার ফল ভুগ করতে পারবেন, এর বিনিময়ে আল্লাহ আপনাকে চিরস্থায়ী জান্নাতও দিয়ে দিতে পারেন।
আর যদি সুশিক্ষা না দিতে পারেন এবং ছেলে-মেয়ে অন্যায়, পাপাচারে লিপ্ত হয়, জেনা করে, চরিত্রের হেফাজত করেনা, মানুষের সাথে খারাপ ব্যাবহার করে, তাহলে আপনি সেই গুনাহ গুলোর বাগিদার হবেন।
দুনিয়াতে তু শান্তি পাবেনি না আখেরাতেও এর জন্য চরম বিপদের সম্মুক্ষিন হওয়া লাগতে পারে।
কৃতজ্ঞতা আদায়
কৃতজ্ঞতা আদায় করবেন বিশেষ করে মা-বোনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই জন্য কারণ নবি সাঃ জাহান্নামে যে রানীদের দেখেছেন আর তাঁদের জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো নিয়ামতের শুক্রিয়া আদায় না করা।
পুরুষরাও শুক্রিয়া আদায় না করার কারণে জাহান্নামে যাবে। মা-বোনরা আপনার স্বামীর এবং আপনার যা কিছু আছে যা আল্লাহ দিয়েছেন তাহাঁর উপরে শুক্রিয়া আদায় করবেন।
গালাগালি না করা
কখনো মুখ কারাপ করে গালাগালি করবেন না, অনেক সময় মা রাগের মাতায় সন্তানদের অভিশাপ দেন, বদ দোয়া করেন। এগুলো খুব খারাপ জিনিষ, নবি করিম সাঃ বলেছেন যে ব্যাক্তিকে অভিশাপ দেওয়া হয় সে সেটার উপযুক্ত না হলে যে দেয় তার উপরে এসে পরে।
এজন্য কোন অবস্তাতেই যেন এগুলো না হয়। নারীরা জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ এটাও।
আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখা
আপনার স্বামীকে তার বাই-বোনের সাথে সম্পর্ক রাখতে কোন বাদা দিবেন না, অনেক মহিলা আছে বোকার মত কাজ করে স্বামী যদি তার টাকা ভাই-বোনকে দেয় সে অপছন্দ করে।
মা-বাবার খুঁজ কবর বেশি নিলে স্ত্রীদের কাছে সেটা ভালো লাগেনা। নবি করিম (সাঃ) বলেছনেঃ যে ব্যাক্তি চায় তার রিজিকে আল্লাহ বরকত দিক, তার হায়াতে বরকত দিক তাহলে সে যেন রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখে।
সাদাকা
সাদাকা দিবেন, কারণ সাদাকা জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায়।
সময়ের গুরুত্ব
সময়ের অপচয় করবেন না, এখন এমন একটা সময় চলছে যে কারণে আজকের যোগের বেশিরভাগ মানুষ জাহান্নামে যাবে সেটা হলো মোবাইল ফোনের অপব্যবহার।
উপসংহার
পুরুষদের তুলনায় নারীদের জান্নাতে যাওয়া যেমন সহজ ঠিক তেমনি ভাবে তাদের কিছু ছোট ছোট বদ অব্বাসের কারণেও অনেক মহিলা জাহান্নামে যাবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম চরিত্রের অধিকারী বানান।