যাদের আমল আল্লাহ কবুল করেন না

আজ আমরা আলোচনা করব, এমন কিছু হতবাগা ব্যাক্তি আছেন তারা যতই নেক আমল করে না কেন আল্লাহ তায়ালার কাছে তা কবুল হয়না। বলা বাহুল্য আপনি আমল করবেন এবাদত করবেন আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করলেই আপনি জান্নাতে যেতে পারবেন। যে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা আমল, এবাদত, জিকির, আজকার, তাসবিহ, সালাত, সিয়াম সব করি সে আল্লাহর কাছে যদি এইগুলো গ্রহন যোগ্য না হয় আল্লাহ যদি সেগুলোকে গ্রহন না করেন তাহলে এই আমল করে আমাদের কোন উপকার আসবেনা। 

আরও পড়ুনঃ দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়

অমুসলিম ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহন করার পর শিরখ করলে

সুনানে নাসায়িতে বর্ণীত হয়েছে রাসুল সাঃ বলেছেন অমুসলিম ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহন করলেন এবং ইসলাম গ্রহন করার পর যদি আবার তিনি যদি শিরখে লিপ্ত হন তাহলে তার কোন আমল আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন না। যদি সে পুনরায় আবার তাওবা করে মুসলমান হয় তাহলেও তার কোন আমল কবুল হবেনা যদি না সে তার শিরখি সমাজ থেকে বের হয়, শিরখি দেশ থেকে বের হয় মুসলমানদের দেশ এবং সমাজে না আসে। মুসলমানদের সমাজে আসার আগ পর্যন্ত তার কোন আমল কবুল হবেনা। 

আরও পড়ুনঃ আমাদের জীবনে কেন বিপদ আসে

অপবিত্র অবস্তায় আদায় করা সালাত

আবু দাউদ শরিফে বর্ণীত হয়েছে রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যাক্তি অপবিত্র অবস্তায় সালাত আদায় করে তার ঐ সালাত আল্লাহ গ্রহন করেন না। পবিত্রতা অর্জন করা সলাতের জন্য পূর্ব সর্ত। যদি পবিত্রতা অর্জনে ত্রুটি থাকে কোন জায়গায় ভালো মত পানি না পৌছায় তাহলে আপনার এই সালাত হবেনা। এই সালাত পবিত্রতা অর্জন করে আবার পড়তে হবে। সালাত কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ধৈর্যশীল হওয়ার উপায় 

হারাম উপার্জন থেকে দেওয়া সাদকা

আমাদের সমাজে এখন হালাল উপার্জন করা মানুষ সোনার হরিং হয়ে গেছে, দানকারী মানুষের অভাব নেই সবাই কিছুনা কিছু দান করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই হাদিসটি জানার পরে দান করার চাইতে ইনকাম যেন হালাল থাকে সেই দিকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিব। নবি (সাঃ) বলেনঃ ওয়ালা সাদকাতাম মিন উলুল– অবৈধ সম্পদ, হারাম উপায়ে যে সম্পদ আপনি অর্জন করেছেন সেই সম্পদ দিয়ে যদি আপনি সাদকা করেন এই দান কবুল হবেনা। এটা আল্লাহর কাছে গর্হণ যোগ্য হবেনা। 

আরও পড়ুনঃ মানুষকে গুনাহ করতে উৎসাহিত করে চার বিষয়

মহিলা নামাজ পরছেন খিমার ব্যতীত

ঐ মহিলার সালাত কবুল হবেনা যিনি খিমার পরিধান করা ছাড়া নামাজ আদায় করছেন। সুনানে আবু দাউদে আসছে রাসুল (সাঃ) বলেনঃ প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা যদি খিমার পরিধান করা ছাড়া নামাজ আদায় করেন তাহলে তার নামাজ কবুল হবেনা। পরিপূর্ণ সতর ডেকে নামাজ আদায় করতে হবে, মহিলাদের সতর বলা হয় মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত, এর মধ্যে শুধু মুখ মন্ডল এবং হাতের কবজি পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

মহিলা সুগন্ধি ব্যাবহার করে মসজিদে গেলেন

যেই মহিলা সালাত আদায় করতে মসজিদে গেলেন সগন্ধি ব্যাবহার করে তার সালাত কবুল হবেনা। ঐ মহিলা সুগন্ধি ব্যাবহার করে মসজিদে গিয়ে যতই আমল করুন তার কোন আমল আল্লাহর কাছে কবুল হবেনা। 

অসন্তুষ্ট ইমামের নামাজ কবুল হয়না

কোন এলাকা বা গ্রামের কোন মসজিদের ইমামের উপর যদি এলাকা বাসি অসন্তুষ্ট থাকেন তাহলে সেই ইমামের নামাজ আল্লাহর কাছে কবুল হয়না। তবে এলাকা ইমামের উপর অসন্তুষ্ট হওয়ার জন্য নিশ্চয়ই যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে। 

স্বামীর নিকট অসন্তুষ্ট স্ত্রী

ঐ মহিলার কোন আমল আল্লাহ কবুল করেন না, যেই স্ত্রী সারা রাত কাঁটালো কিন্তু সারা রাত তার স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগবেই, এমনকি নবি করিম (সাঃ) এরও তার স্ত্রীদের সাথে কখনো কখনো ঝগড়া লাগতো। স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকলে ঝগড়া লাগবেই, তবে স্ত্রীদের অবশ্যই তার আমল আল্লাহর নিকট কবুল করতে হবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে সেহেতু কখনো সারা রাত স্বামীর সাথে রাগ করে থাকবেন না। অন্তত রাতের কিছু অংশের মধ্যে রাগ মিটানোর চেষ্টা করুন। 

ক্রীতদাস পালিয়ে গেলে 

ঐ গোলাম বা ক্রীতদাস যে তার মালিকের থেকে পালিয়ে গেছে, কোন অনুমতি ছাড়া বা কোন চুক্তি ছাড়া। 

মদিনায় অশান্তি সৃষ্টি কারি

ঐ ব্যাক্তি যে মদিনার মত শহর রাসুল (সাঃ) এর মোহাব্বতের শহর, পৃথিবীর সবচেয়ে দ্বিতীয় গুরুত্ব পূর্ণ এবং পবিত্র শহর, যে শহর কিয়ামতের আগে দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকবে, যে শহরের বহু ফযিলতের কথা হাদিসে বর্ণীত আছে সেই শহরে যেই ব্যাক্তি ফেতনা ফাছাদ করবে, অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে সেই ব্যাক্তির কোন আমল আল্লাহর কাছে কবুল হবেনা।

মা বাবার অবাধ্য সন্তান

ঐ ব্যাক্তি যার ফরজ, নফল কোন আমল আল্লাহর কাছে কবুল হবেনা, যারা মা বাবার অবাধ্য সন্তান। মা বাবাকে কষ্ট দেয়, মা বাবার ন্যায্য দাবী মানেনা, মা বাবার ন্যায় সংগত নির্দেশ অমান্য করে। আল্লাহ এবং রাসুল (সাঃ) এর পরে মা বাবার নির্দেশ মানতে সন্তান বাধ্য।   

দান করে কোঁটা দেয়

যে ব্যাক্তি দান করে কোঁটা দেয়, মানুষকে যেকোন ধরনের দান করার পর থাকে কোন ভাবেই কোঁটা দেওয়া যাবেনা। কোঁটা দিলে আপনার কোন আমল আল্লাহ গ্রহন করবেন না। 

তাকদিরকে অস্বীকার করা ব্যাক্তি

যে ব্যাক্তি তাকদিরের উপরে বিশ্বাস করেনা এবং একি সাথে তাকদিরকে অস্বীকার করে সেই ব্যাক্তির উপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট থাকেন এবং তার কোন আমল কবুল করেন না। 

ইসলামী বিদ্বানের বিপরীতে বিছার করা শাসক

যেই শাসক ইসলাম এবং কুরআনের বিদ্বানের বিপরীতে গিয়ে বিছার করে তার কোন আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হবেনা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *